ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষকরা কালো চালের পুষ্টিগুণ নিয়ে নতুন গবেষণা করেছেন, যা সাদা চালের তুলনায় অনেক বেশি উপকারী। তারা ২৫ জানুয়ারি বিভিন্ন খাবারে কালো চাল ব্যবহারের প্রদর্শনী করেছিলেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, কালো চালের বাইরের আবরণে উচ্চমাত্রায় পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা সাদা চালের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষ করে, কালো চালের মধ্যে জিংক এবং আয়রন রয়েছে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি, যা সাধারণত এশিয়ার খাদ্যতালিকায় ঘাটতির সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কালো চালের মধ্যে অ্যান্থোসায়ানিন, ফিনল এবং ফ্লাভোনয়েডের পরিমাণও সাদা চালের তুলনায় অনেক বেশি, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণসম্পন্ন। এই উপাদানগুলি শরীরের দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন, কালো চালের অন্তর্ভুক্তি আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে স্বাস্থ্যকর উপাদান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
গবেষকরা কালো চাল দিয়ে তৈরি ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, তেল পিঠা, কেক, হালুয়া, পায়েস এবং খিচুড়ির মতো মুখরোচক খাবারের প্রদর্শন করেছেন, যা স্বাদে এবং পুষ্টিতে আলাদা। তবে, কালো চালের জনপ্রিয়তা এখনও দেশের মানুষের মধ্যে সীমিত। অধ্যাপক ছোলায়মান আলী ফকির জানান, কালো চালের অস্বাভাবিক রং এবং পরিচিতির অভাবের কারণে মানুষ একে গ্রহণ করতে হিমশিম খাচ্ছে, যদিও এর পুষ্টিগুণ অত্যন্ত সমৃদ্ধ।
কৃষকদের জন্যও কালো চাল একটি সম্ভাবনাময় ফসল হতে পারে বলে গবেষকরা মনে করছেন। এর উচ্চ বাজারমূল্য এবং আন্তর্জাতিক রপ্তানি সম্ভাবনা দেশের অর্থনীতির জন্য লাভজনক হতে পারে। কালো চালের পুষ্টিগুণ এবং রঙিন খাবারের সৌন্দর্য ভবিষ্যতে খাদ্যাভ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠতে পারে।